পুনরায় মাংস আমদানি শুরু করার জন্য বাংলাদেশকে আহবান জানিয়েছে ভারত। সম্প্রতি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে এ প্রস্তাব দেয় ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন। বর্তমানে মাংস আমদানি বন্ধ থাকায় এই পণ্য আমদানির সঙ্গে জড়িত দুই দেশের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়। এর আগে দেশের স্থানীয় গবাদি পশু খামারিদের উৎসাহিত করতে ও গবাদি পশুর চাষিদের রক্ষায় ভারত থেকে হিমায়িত মাংস বিশেষত মহিষের মাংস আমদানি বন্ধ করে সরকার।
তবে ২০২২ সালে জারি করা নির্দেশনায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, হিমায়িত মহিষের মাংস আমদানির জন্য প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে অনুমতি লাগবে।এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানায় ভারতীয় রপ্তানিকারক ও বাংলাদেশি আমদানিকারক সমিতি। এক বিবৃতিতে তারা জানায়, নীতির পরিবর্তনের কারণে গত কয়েক মাসে কোনো হিমায়িত গরুর মাংস আমদানি না হওয়ায় তাদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এক চিঠিতে অল ইন্ডিয়ান বাফেলো অ্যান্ড শিপ মিট এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (এআইএমএলইএ) ও বাংলাদেশ মিট ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমআইটিএ) সরকারকে বিষয়টি সমাধানে কিছু ছাড় দেওয়ার অনুরোধ জানায়।
চিঠিতে বলা হয়, ২০২১-২২ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে মাংস আমদানিতে ২০% সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ভারত থেকে হিমায়িত হাড়বিহীন গরুর মাংস আমদানির জন্য ৪-৫ কেজি থেকেই এই কর বসানো হবে। এটি ভারতীয় রপ্তানিকারকদের জন্য সাফটা চুক্তির সুবিধাকে লঙ্ঘন করে। এতে বলা হয়, ভারতীয় কোম্পানিগুলো উচ্চ-মানের ও স্বাস্থ্যসম্মতভাবে প্রক্রিয়াজাত মাংসের বৃহত্তম রপ্তানিকারক এবং সেটি বাংলাদেশে অ-প্রতিযোগিতামূলক।
তবে বাংলাদেশ এখন মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১৪টি দেশ থেকে মাংস আমদানি করতে প্রায় ২.৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে বিলাসবহুল হোটেল ও ফুড চেইন প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর বলছে, দেশে ৭.৪ মিলিয়ন টন মাংসের চাহিদার বিপরীতে ৮.৪৪ মিলিয়ন টন মাংস উৎপাদন হচ্ছে। বাংলাদেশ ১৪টি দেশ থেকে মাংস আমদানি করে, যার সবচেয়ে বড় উৎস ভারত। অন্যান্য দেশগুলির মধ্যে রয়েছে ইথিওপিয়া, ফ্রান্স, কোরিয়া, থাইল্যান্ড, চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ইন্দোনেশিয়া।